ইলেকট্রিসিটি বা তড়িৎ বা বিদ্যুৎ হলো এক প্রকার শক্তি যা তড়িৎ আধানের স্থিতি বা গতির ফলস্বরূপ সৃষ্টি হয় । অন্য কথায় , ইলেকট্রিসিটি হচ্ছে এমন এক অদৃশ্য শক্তি যা তাপ,চাপ এবং আলো ও শব্দ সৃষ্টি করে অসংখ্য বাস্তব কাজ সমাধা করে । বিজ্ঞানী ভোল্টা কর্তৃক ইলেকট্রিসিটি আবিষ্কারের পর থেকেই মূলত আধুনিক সভ্যতার যাত্রা শুরু হয় । ইলেকট্রিসিটি ছাড়া জীবন যেমন অচল ,তেমনিভাবে কৃষি নির্ভর এবং শিল্প নির্ভর অর্থনীতি এখন পরিপূর্ণভাবে ইলেকট্রিসিটির উপরই নির্ভরশীল । ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজিকে বাদ দিয়ে সভ্যতার সকল উপকরনই অর্থহীন । সুতরাং বলা বাহুল্য, সভ্যতার সর্বত্রই ইলেকট্রিসিটির গুরুত্ব অপরিসীম এবং এর চাহিদা চিরদিনই থাকবে । ফলে আধুনিক ডিজিটাল বিশ্বায়নে ইলেকট্রিক্যাল প্রযুক্তির চাহিদা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৬২ সাল থেকে তার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে । তারই ধারাবাহিকতায় অত্র ইনস্টিটিউটে চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতি সেশনে ২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে । অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীরা এখানে বিচরণ করে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন সমৃদ্ধশীল করণে নিজেকে শাণিত করে তুলতে সক্ষম হয় । দেশের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত , যোগ্য ও মেধাবী সমৃদ্ধশীল শিক্ষক মন্ডলী হাতে কলমে ইলেকট্রিক্যাল প্রযুক্তির সকল বিষয়গুলো অত্যন্ত যত্নসহকারে শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক ক্লাসগুলোতে পাঠদান করে থাকেন । এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জামসহ ইলেকট্রিক্যাল ল্যাব সমূহ , রয়েছে ডিজিটাল ট্রেইনারবোর্ডসমূহ , রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ফ্যাসিলিটি । এছাড়াও রয়েছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল , যাদের ঐকান্তিক প্রয়াসে প্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আগামীর বাংলাদেশ । প্রতিযোগীতামূলক বিশ্বে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে অত্র ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজির শিক্ষক এবং কর্মচারীবৃন্দ দায়বদ্ধ ।
এখান থেকে ইলেকট্রিক্যাল প্রযুক্তিতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সমাপ্ত করে একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তার মর্যাদা লাভ করে । এছারাও দেশে-বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সহ উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আরো সমৃদ্ধশীল করে তুলতে পারে । ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে একজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ তথা বিশ্বে বিদ্যুৎ উৎপাদন , পরিবহন,নিয়ন্ত্রণ ও বিতরণ সেক্টরগুলোতে অত্যন্ত মর্যাদার সাথে চাকুরি করে যাচ্ছে এবং সফল শিল্প উদ্যোক্তা হিসাবে দেশের জিডিপিতে অবদান রাখছে । সর্বোপুরি দেশের সরকারি , আধা-সরকারি , স্বায়ত্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান, প্রাইভেট কোম্পানী, শিল্প-কারখানা সহ প্রায় সকল ক্ষেত্রেই ইলেকট্রিক্যাল প্রযুক্তির শিক্ষার্থীরা নিজেদের কর্মক্ষেত্র নির্বাচন করে কাজ করে যাচ্ছে ।
একজন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার যেসকল ক্ষেত্রগুলোতে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে সেসকল ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম যেমন à BPDB, REB,PBS,RPCL,PGCB,EGCB,DPDC,NWPGCL,WZPGCL,DESCO,DESA,BWDB, WASA, BEPZA , BAPEX ( GAS , COAL ) , BTCL, EED,PWD,BJMC, MOD,MOE, NPP, CAAB PHED, LGED, RAILWAY, PADMA MULTIPURPOSE BRIDGE, RIVER TUNNEL , SOLAR POWER ইত্যাদি ।
পরিশেষে, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বায়নে আগামীর দক্ষ মানব সম্পদে সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানে নিজেকে আত্নমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল সচেতন অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিঃশ্চিন্তে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজিতে ভর্তি করিয়ে সুখী – সমৃদ্ধশালী সমাজ বিনির্মানে অবদান রাখতে পারেন ।